মার্কেটপ্লেসে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের ব্যর্থতার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ জেনে নিন
আজকাল মানুষের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিনিয়ত লক্ষ্ লক্ষ্ নতুন ফ্রিল্যান্সার বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলোতে যোগ দিচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ নতুন ফ্রিল্যান্সাররাই সফল হওয়ার পরিবর্তে ব্যর্থ হচ্ছেন এর কারণ কি ? আজকে আমি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এ ব্যর্থ হবার অতি প্রয়োজনীয় সাতটি কারণ সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি যে গুলো একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার করে থাকেন। যার ফলে তারা মার্কেটপ্লেসে সফল হয়না। আসলে বেশিরভাগ নতুন ফ্রিল্যান্সাররাই অন্যান্য সফল ফ্রিল্যান্সারদের ডলার ইনকাম করতে দেখে ইনফ্লুয়েন্স হয়ে ভালোভাবে কাজ না শিখে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ শুরু করছেন ।কিন্তু ঠিকমতো কাজ ও মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে না জানার কারণে বেশিরভাগ নতুন ফ্রিল্যান্সাররাই সাফল্য অর্জন করতে পারছেন না । তাই প্রথমে আপনাকে জানতে হবে এ প্রফেশন আপনার জন্য ঠিক কিনা এবং সফল হওয়ার জন্য আপনাকে কি কি করা দরকার।
![]() |
ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে জেনে নিন সাতটি বিষয় যার যার ওপর নির্ভর করছে আপনার সফলতা ব্যর্থতা |
বর্তমানে কোভিদ নাইনটিন এর কারণে অনেক মানুষ নটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত জবের থেকে ফ্রিল্যান্সিং কে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পছন্দ করছেন। ফলে মার্কেটপ্লেসগুলোতে আগের থেকে তুলনামূলকভাবে কম্পিটিশন অনেক বেড়ে গেছে। তাই আপনাকে এই হিউজ কম্পিটিশন এর মাঝে সফল হওয়ার জন্য ভালো স্কিলড এবং এক্সপেরিয়েন্সড হতে হবে । আজকে জেনে নিন আপনি কেন ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে ব্যর্থ হচ্ছেন এবং কি কি করলে আপনি 100% সফল হতে পারবেন।
আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট দেখুনঃ
বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের অসফল হওয়ার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো: অধিকাংশ নতুন ফ্রিল্যান্সাররা অনলাইনে টাকা কামানোর লোভে ভালোভাবে কাজ না শিখে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রোফাইল খুলে বসে থাকে। অনেকদিন ধরে কাজ না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে ।আজকে আমি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে অসফল হবার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আপনাদের সামনে তুলে ধরব। যেগুলো আপনাকে আপনার দুর্বলতা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে। তো চলুন সেই গুরুত্বপূর্ণ সাতটি কারণ জেনে নেওয়া যাক:
- সিরিয়াস না হওয়া: মার্কেটপ্লেসে নতুনদের অসফল হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হল সিরিয়াস না হওয়া ।ইউটিউব অথবা বিভিন্ন অ্যাড দেখে উৎসাহিত হয়ে ভালোভাবে কাজে না শিখে ফ্রিল্যান্সিং করতে এসে বেশিরভাগ নতুন ফ্রিল্যান্সাররা ব্যর্থ হচ্ছেন। একবার ভেবে দেখুন আপনি আপনার নিজের দেশে কাজ পান না সেখানে কিভাবে আপনি ভাবলেন একটি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে সহজে কাজ পেয়ে যাবেন।এর জন্য আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। অনেক সময় দিতে হবে, রাত জাগতে হবে । ফ্রিল্যান্সিংকে পার্ট টাইম জব হিসেবে না নিয়ে ফুলটাইম জব হিসেবে নিতে হবে।
- ধৈর্যের অভাব:অনলাইনে নতুন হিসেবে কাজে না পাওয়ার আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ধৈর্যের অভাব ।অনলাইনে দু একটা ভিডিও দেখে অথবা কোন কোচিং থেকে ক্লাস করে অতি কনফিডেন্সের সাথে ফ্রিল্যান্সিংয়ে এসে দেখেন কাজ পাচ্ছেন না, তখন সহজেই হাল ছেড়ে দেন। যে কোন কাজে সফলতা অর্জনের প্রথম ধাপ হলো ধৈর্য ধরা ।টাকা কামানো এতই যদি সহজ হতো তাহলে টাকার কোন মূল্যই থাকত না।
- সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে না পারা : বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে একটা প্রফেশনাল প্রোফাইল এবং গিগ কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কে অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু নতুন ফ্রিল্যান্সাররা নিজের প্রোফাইল ও গিগ প্রফেশনাল ভাবে উপস্থাপন করতে না পারায় অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ব্যর্থ হন । নতুনদের কাজ পাওয়ার অন্যতম সহজ পন্থা বায়ার রিকুয়েস্ট ।আপনি যদি একটি প্রফেশনাল ভাবে বায়ার রিকুয়েস্ট সেন্ড করতে পারেন তাহলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পায় ।কিন্তু যারা মার্কেটপ্লেসে নতুন হয় তারা একটি প্রফেশনাল বায়ার রিকুয়েস্ট পাঠাতে অসমর্থ হওয়ায় কাজ পাওয়া তাদের কাছে কঠিন হয়ে পড়ে।
- মানসিকপ্রস্তুতির অভাব: বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে উৎসাহিত হয়ে টাকা ইনকামের লোভে নিজের দক্ষতার দিকে লক্ষ্য না করে মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ করতে আসে ।তাদের প্রথম টার্গেট টাকা কামানো হওয়ায় কাজের প্রতি ততটা গুরুত্ব দেয় না।ফলে বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় একটা বাজে রিভিউ পাই, যা তাদের গিগের রাঙ্ক ডাউন করে দেয়।ফলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এজন্য আপনাকে প্রথমে আপনার স্কিলের প্রতি নজর দিতে হবে ।এবং যতটা সময় ধরে পারেন আপনার স্কিল কে মজবুত করার চেষ্টা করতে হবে। আর ফ্রিল্যান্সিংকে ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে হবে।
- ইংরেজিতে দুর্বল: অনলাইনে কাজ না পাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ইংরেজিতে দুর্বল হওয়া ।ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো আন্তর্জাতিক হওয়ায় সেখানে বায়ার ও অন্যান্য সেলার দের সাথে কমিউনিকেট করার জন্য ইংলিশ ব্যবহৃত হয়। তাই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে সাফল্য পেতে বিদেশি বায়ারদের সাথে কমিউনিকেট করার জন্য ইংলিশে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে বায়ারকে কনভিন্স করার জন্য আপনার কমিউনিকেশন স্কিল খুব ভালো হতে হবে ।মার্কেটপ্লেসগুলোতে যারা নতুন তাদের ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা না থাকায় বিদেশি বায়ারদের ভালোভাবে কাজ সম্পর্কে নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে না পারায় বেশিরভাগ সময়ই ব্যর্থতার শিকার হচ্ছেন ।
- ভালোভাবে না জেনে বুঝে ফ্রিল্যান্সিং করতে আসা: নতুন ফ্রিল্যান্সারদের ব্যর্থতার এক অন্যতম কারণ হলো না জেনে বুঝে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করা।প্রথমে মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ভাল ভাবে না জেনে বুঝেই কাজ করতে এসে যখন দেখে কাজ পাচ্ছে না তখন সহজেই হাল ছেড়ে দেয ।প্রত্যেকটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কিছু বেসিক নিয়ম কানুন রয়েছে যেগুলো ফলো করা বাধ্যতামূলক। নতুন ফ্রিল্যান্সাররা মার্কেটপ্লেসের নিয়ম সম্পর্কে অবগত না হওয়ায় রুলস বা কন্ডিশন ভঙ্গ করে। ফলে অনেক সময় তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেওয়া হয়। তাই মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ভালোভাবে জানার সাথে সাথে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন স্কিল শেখার মাধ্যমে নিজেকে আপগ্রেড করতে হবে ।এবং বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাজ করে বায়ারকে স্যাটিসফাই করতে হবে ।তাহলে দেখবেন আপনাকে কাজের জন্য আর ভাবতে হবে না।
- গবেষণার অভাব: অনলাইনে আরনিং করতে গেলে আপনাকে ভালোভাবে ইন্টারনেট সার্চ করা জানতে হবে ইন্টারনেট এমন একটি মাধ্যম যেখানে আপনি আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর সহজেই পেতে পারেন ।যে ভালো ইন্টারনেট সার্চ করার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে পারে তার কাছে অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে অন্যদের তুলনায় কাজ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়। নতুন ফ্রিল্যান্সাররা একেতো ইংলিশে ততটা দক্ষ না হওয়ায় ইন্টারনেট এ যেকোনো কাজ রিলেটেড প্রবলেম সার্চ করতে পারে না ফলে বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাজ ডেলিভার করতে অসমর্থ হওয়া নতুনদের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ।এছাড়াও অন্যদের সাথে কম্পিটিশনে জিততে হলে আপনাকে সবসময় আপডেট ও আপগ্রেড থাকতে হবে আপনার কাজের পরিপ্রেক্ষিতে, আর তা হবে ইন্টারনেটে নতুন নতুন বিষয়ে গবেষণার মাধ্যমে।
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন