ঘুম হারাম ন্যাটো নেতাদের । আর্টিকেল ৪ ও ৫ প্রয়োগ করবে ন্যাটো ?

ইউক্রেন জুড়ে রাশিয়ার প্রায় ১০০ টি খেপোনাস্ত্র হামলার মধ্যে পোল্যান্ডে খেপোনাস্ত্র হামলায় অন্তত ২ জন্য নিহত হয়েছে। খেপোনাস্ত্র হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করছে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র। যদিও রাশিয়া তা অস্বীকার করেছে। অন্য দিকে ইউক্রেন সীমান্তবরতি পোল্যান্ডে হামলার ঘটনায় সতর্কতার জারির পাশাপাশি জরুরী বৈঠক ডেকেছে। পশ্চিমা সামরিক জন ন্যাটো,  ন্যাটো ভুক্ত দেশ হওয়াই জোটটির  অনুচ্ছেদ ৪ ও ৫ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সে অনুযায়ী পোল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব রহ্মায় পাল্টা ব্যবস্তা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সামরিক এই জোট টি। এই অবস্তায় অনেকের প্রশ্ন, তবে কি এবার  ন্যাটো জোট রাশিয়ার উপর পুর্ণদমে হামলা শুরু করবে?  কি আছে  ন্যাটো জোটের অনুচ্ছেদ ৪ ও ৫ এ ? আর সে হ্মেএে রাশিয়ার ভুমিকায় বা কি হবে?

ঘুম হারাম ন্যাটো নেতাদের । আর্টিকেল ৪ ও ৫ প্রয়োগ করবে ন্যাটো ?

আরো পড়ুনঃ সমৃদ্ধির পথে কাতার ছাড়াও উপসাগরীয় অঞ্চল

নতুন করে কেন উত্তেজনা ?

ইউক্রেনের খেরসোন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের পর অনেকেই মনে করছিলেন, রাশিয়া হয়তো যুদ্ধ থেকে পিছু হঠছে। তবে তার উল্টোটা ঘটেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট  ভ্লাদিমির পুতিন তার সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার কয়েকদিনেব মাথায় গেল ৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক অভিযান পরিচালনা করেছে গেল মঙ্গলবার। বৃষ্টির মত একেক পরে এক খেপোনাস্ত্র ছুরেছে রুশ সেনারা। বলা যায়, নতুন করে আক্রমণের তীব্রতা বাড়াইছে মস্কো। মূলত বিদ্যু স্থাপনা গুলোই রুশ খেপোনাস্ত্রের মূল লক্ষ্য ছিল বলে  জানিয়েছে গনমাধ্যম। এই হামলার পর ইউক্রেনের বিশাল অংশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কিয়েভের দাবি মঙ্গলবারে হামলা গেল হামলা ১০ অক্টোবর এর ও রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সে সময় ৮৪ টি খেপোনাস্ত্র ছুরে রুশ সেনারা। তবে এবার শতাধিক খেপোনাস্ত্র ছোরা হয়। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি খেপোনাস্ত্র ধ্বংস করার দাবি করেছে জেলেস্কি বাহিনী। বিদ্যুৎ স্থাপনার পাশাপাশি কিয়েভের আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করেও এদিন হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে মস্কো।

পোল্যান্ড সীমান্তেও হামলা

ইউক্রেন জুড়ে ব্যাপক খেপোনাস্ত্র হামলার মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী পোল্যান্ডের একটি গ্রামে বিস্ফোরণে ২ জন নিহত হওয়ার খবর জানায় পোল্যান্ড সরকার। রাশিয়ার ছোরা খেপোনাস্ত্র লক্ষ্য ভ্রস্ট হয়ে এই বিস্ফোরণ হয়েছে বলেও মনে করতেছে অনেকে। তবে খেপোনাস্ত্র গুলো যে রাশিয়ারই তা নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি করেছে পোল্যান্ড সরকার।

ন্যাটোর জরুরি বৈঠক।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট  ন্যাটোর  সদস্য পোল্যান্ড। আর  ন্যাটোর গঠন তন্ত্রের আর্টিকেল ৫ অনুযায়ী ১ সদস্য উপরে হামলা জোটের  সবার উপরে আক্রমণ বলে বিবেচিত হবে। সে হিসাবে পোল্যান্ডের উপরে হামলাকে গুরুত্ব দিয়ে পদহ্মেপ নিচ্ছে  ন্যাটো। তাই রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে খেপোনাস্ত্র ছুরক বা দুর্ঘটনাবসত হক বিষয় টা নিয়ে উদ্বিগ্ন ন্যাটো সদস্যরা। বিস্ফোরণের ঘটনা এরই মধ্যে তদন্ত করছে জোট টি। একি সঙ্গে পোল্যান্ডের সাথে নিবিড় ভাবে সমন্বয় রক্ষা করছে তারা।

কী আছে ন্যাটোর আর্টিকেল ৪ ও ৫ এ ?

গণমাধ্যম গুলোতে ১৯৪৯ সালে ন্যাটোর প্রতিষ্ঠাকালীন অনুচ্ছেদ ৪ ও ৫ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় টি তা হলো, সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকে সবার অনুমতি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়  ন্যাটো। ন্যাটোর ৪ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী  সদস্য দেশগুলো  ন্যাটোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটির  দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে। এবং এ বিষয়ে তাদের মিত্রদের সাথে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। নিবন্ধে বলা হয়েছে, যখনই তাদের কারো মতে কেনো পহ্মে আঞ্চলিক অক্ষ্নতা, রাজনীতির স্বাধীনতা বা নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে তখনই দলগুলো একসাথে আলোচনা করবে। 

কার্যত, এটি অনুচ্ছেদ ৫ এর জন্য একটি প্রস্তুতি মূলক আর্টিকেল এবং  ন্যাটো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটি এখন পর্যন্ত অন্তত ৭ বার ব্যবহার করা হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর পোল্যান্ড সহ বেশ কয়টা দেশ এই বিষয়ে পরামর্শের জন্য অনুরোধ জানায়। এমনকি তুরস্ক বেশ কয়েকবার অনুচ্ছেদ ৪ এর পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার আহ্বান জানায়। অন্যদিকে অনুচ্ছেদ ৫ এ মূলত  ন্যাটোর যৌথ প্রতিরক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

যেখানে বলা হয়েছে ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকাতে  ন্যাটোর ১ বা একাদিকের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আক্রমণ তাদের সকলের বিরুদ্ধে আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে। জাতিসংঘ সনদের অনুচ্ছেদ ৫১ অনুযায়ী এককভাবে বা সম্মিলিত ভাবে আত্মরক্ষা তৎক্ষনাত আলাদাভাবে এবং অন্যান্য পক্ষের সাথে এক হয়ে আক্রমণ করার বিষয়টিও এতে উল্লেখ রয়েছে। এই ধরনের যেকোনো সশস্ত্র এবং এর গৃহীত সমস্ত ব্যবস্থা অবিলম্বে নিরাপত্তা পরিষদের রিপোর্ট করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই জাতিসংঘ সনদে। নিরাপত্তা পরিষদ  যখন আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার ও বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তখন আবার এই ধরনের ব্যবস্থা বন্ধ করা হবে।

ন্যাটোর পরবর্তী পদহ্মেপ

মিসাইল হামলার পর ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ আরও তড়িৎগতিতে শুরু করতে পারে  ন্যাটো। এমনটায় মনে করছে বিশ্লেষকরা। ন্যাটোকে যোগদান দিয়ে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের দ্বন্দ্বের শুরু। এছাড়া মিত্রদেশ হিসেবে এরই মধ্যে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপের দেশগুলো। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সহযোগিতার শুরুটা যুক্তরাষ্ট্রই করবে বলে মনে করেন ব্রিটেন ভিত্বিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক সামরামনী। তার মতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে অন্যান্য দেশগুলো এগিয়ে আসবে।  ন্যাটোর সদস্যরা তাদের প্রতিশ্রুত দেখাতে আরো সামরিক মহড়া শুরু করতে পারে বলে মনে করেন তিনি। এরই মধ্যে  ন্যাটোর আর এক সদস্য লাদবিয়াও পোল্যান্ডে খেপোনাস্ত্র হামলায় জরুরী বৈঠক ডেকেছে। এছাড়া পোল্যান্ড উচ্ছেদ ৪ এর প্রয়োগ করবে কিনা সে বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

আরো জানুনঃ
পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url