google.com, pub-8571279523475240, DIRECT, f08c47fec0942fa0 Freelancers IT | Learn More About Freelancing and Outsourcing

sfd

আপনার সন্তান কে কখন ফোন নিয়ে দেওয়া উচিত?

আপনার সন্তান কে মোবাইল ফোন দেওয়া উচিত? নাকি যতদূর সম্ভব তাকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখা উচিত?  এই প্রশ্ন বর্তমান সময়ে সকল পিতা মাতার বড় একটি ভাবনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। আশা করি, এই পোস্ট এর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার শিশুকে কখন মোবাইল ফোন দেওয়া উচিত হবে। এই পোস্টটি পড়লে আপনি মোবাইল ফোন এর সুবিধা অসুবিধা  সম্পর্কে  জানতে পারবেন।

আপনার সন্তান কে কখন ফোন নিয়ে দেওয়া উচিত

মোবাইল ফোন এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে এত বেশি সংবাদ শিরোনাম হয় যে, শিশুকে ফোন থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া পিতা মাতার ক্ষেত্রে খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। কারণ আপনার মনে হতে পারে যে, এটা একটা পেন্ডোরা বক্স। যেটি খোলার সাথে সাথে দুনিয়ার সব খারাপ জিনিস আপনার সন্তান এর জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে। 

আরও জানুনঃ আপনার সন্তানের মোবাইলে পর্ন সাইট বন্ধ করবেন যেভাবে

স্মার্ট ফোন এর প্রতি আসক্তিকে বলা হয় নোমোফোবিয়া বা ফোন হারা হয়ে যাওয়ার ভয়। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে এই আসক্তি থেকে বের হয়ে আসা বেশ কঠিন। আর এই কারণে পিতা মাতা সব সময় সন্তানদের হাতে ফোন দেওয়া নিয়ে সবসময়  চিন্তায় থাকে। আবার খারাপ দিক এর পাশাপাশি অনেক ভালো দিক রয়েছে। যার কারণে কোন বয়সে শিশুর হাতে ফোন দিবেন এই নিয়েও চিন্তার শেষ নেই। 

শিশুদের মোবাইল ফোন দেওয়ার সুবিধা

বর্তমান সময়ে সকল স্মার্ট ফোনেই এখন জিপিএস অ্যাপস বা সফটওয়্যার থাকে বলেই শিশুদের চলাফেরা  ট্র্যাক করা যায়। পিও রিসার্চ সেন্টার এর গবেষণার মাধ্যমে জানা যায়, যে যুক্তরাষ্টের ৩৩ শতাংশ অভিভাবক  স্মার্ট ফোনের মাধ্যমেই তারা  তাদের সন্তানদের গতিবিধির উপর লক্ষ্য রাখেন।

এছাড়া সন্তানেরা হারিয়ে গেলে মোবাইল ফোন এর লোকেশন অ্যাপ ব্যবহার করে  বাড়িতে ফিরতে পারে। স্মার্ট ফোন এর ব্যবহার শিশুদের প্রযুক্তিবান্ধব করে। এবং স্কুল ও ভবিষ্যৎ ক্যরিয়ারে এগিয়ে রাখতে সাহায্য করে।স্মার্ট ফোন এখন যোগাযোগ ও আন্দদের বিষয়ই নয়। বরং এটি একটি বর্তমান সময়ে পড়ালেখার উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার হয়। 

বাসায়  বসে শিক্ষার ক্ষেত্রে এটি যে গুরূত্বপূর্ণ সেটি আমরা করোনা মহামারি সময়েই দেখেছি। এছাড়াও অনেক ধরনের শিক্ষামূলক অ্যাপস ব্যবহার করে নতুন নতুন ভাষা আয়ত্ব করা এবং গণিতে দক্ষতা বাড়ানো সহ নানাভাবে কাজে লাগে এই স্মার্ট ফোন।

শিশুদের মোবাইল ফোন দেওয়ার অসুবিধা

মস্তিস্কের গঠনে বাধা সৃষ্টি। যুক্তরাষ্টের ন্যাশনাল ইন্সটিউট অফ হেলথ এর তথ্য অনুযায়ী অনেক বেশি স্ক্রিন টাইমের এর কারণে শিশুদের করটেক্স পাতলা হতে থাকে। যার ফলে, বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতা পরিপূর্ণতা পায় না।

শিশুদের যদি মানুষের এর সাথে মেলামেশার তুলনায় মোবাইল ফোনেই বেশি সময় পার করে। তাহলে সমস্যার সমাধান, আবেগ নিয়ন্ত্রন এবং সমালোচনামূলক চিন্তা ভাবণার উন্নয়ণ বাধা গ্রস্থ হয়। শিশুদের ইন্টারনেট ব্যাবহারে নজরদারি না থাকলে পিতা মাতার অজান্তেই তারা আপওি কর কন্টেট পেতে পারে।

এছাড়া নগ্নতা ও সহিংসতার স্বীকার হতে পারে। যা পরবর্তী জীবনে তাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।এছাড়া সাইবার বোলিং এর মুখেও পরতে পারে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন এবং স্ক্রিন এ সময় কাটানোর কারণে প্রযুক্তি আসক্তি দেখা দিতে পারে। যা থেকে পরবর্তীতে দুচ্শিন্তা এবং আত্মহত্যা প্রবণতা দেখা দিতে পারে।

মোবাইল ফোন কোন বয়সি শিশুদের উপর কি রকম প্রভাব ফেলে

আপনার শিশুকে কখন ফোন নিয়ে দিবেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার আগে জানা দরকার যে মোবাইল ফোন কোন বয়স এর উপর কি রকম প্রভাব ফেলে।

৪ থেকে ৬ বছর বয়স

২০১০ সালের এক গবেষনায় দেখা গেছে যে, এই বয়সের শিশুরা বাবা মা ভাই বোন অথবা সমবয়সী কিংবা লালনপালন কারীদের সাথে সরাসরি মিথস্কিয়ার মাধ্যমে সব থেকে বেশি শিখে। এই বয়সের শিশুরা স্মার্ট ফোন এর পরিবর্তে খেলা কথা বলা বা কোনো কিছু পরে শোনানো হলে তারা তার প্রতি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই বয়সী শিশুদের স্মার্ট ফোন দেওয়া হলে এটি তার সামাজিক দক্ষতা সৃষ্টিকে বাধাগ্রস্থ করে।

মানুষের সাথে সামনা সামনি মেলামেশার ফলে তাদের মধ্য সহমর্মিতা সৃষ্টি হয়। তারা মানুষের মুখের অভিব্যক্তি পরতে শেখে।এ কারণে কানাডিয়ান পেটি অ্যাটিক্স সোসাইটি পরামর্শ দেয় যে ২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের কোনো ধরণের  স্ক্রিন এর সামনে আনা ঠিক নয়।

৭ থেকে ১০ বছর বয়স

এই বয়সের শিশুরা বাবা মার থেকে একটু দুরে থাকে। বেশির ভাগ সময় পার করে স্কুলে এবং স্কুল এর পর অন্যান্য কাজে থাকে। এ কারণে তারা যখন বাহিরে থাকে তখন তাদের সাথে যুক্ত থাকতে অনেক সময় বাবা মা তাদের ফোন দিতে বাধ্য হয়। এ সময় শিশুরা বাবা মার অজান্তেই সোশ্যাল মিডিয়া চালানো শুরূ করে। এটা ঝুকি পূর্ণ কারণ এই বয়সে শিশুদের সমালোচনা মূলক চিন্তা করার দক্ষতা সৃষ্টি হয় না।

এ কারণে তারা বোঝেনা যে, সামাজিক ম্যাধ্যমে কি পোস্ট করা উচিত আর কি পোস্ট  করা উচিত নয়। এই বয়সে শিশুরা সাইবার বোলিং এর শিকার হয়। মিডিয়া এবং প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা মার্কিন প্রতিষ্টান কমনসেন্স মিডিয়া এমন অবস্থায় কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয়। তাদের মতে, এ বয়সি দের কাছে কম ফিচ্যার আছে এমন ফোন দিতে হবে। ইন্টারনেট অ্যাকসেস সিমিত করতে হবে।  এবং বাবা মাকে সব সময় নজর রাখতে হবে। 

১১ থেকে ১৪ বছর বয়স

এই বয়সের শিশুরা মাধ্যমিক স্কুল এ ভর্তি হয় আর অনেকেই স্মার্ট ফোন এর আবদার করে। এই বয়সীদের বেশির ভাগই গুরূত্ব পূর্ণ কিছু দক্ষতা যেমন সমস্যার সমাধান এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ। আর সমালোচনামূলক চিন্তা ভাবণা করতে শিখে। এটা সবার ক্ষেত্রে হয় না। পিও রিসার্স এর এক গবেষনায় দেখা গেছে যে,যুক্তরাষ্টের ৭৩ শতাংশ শিশু ১২ বছর বয়সের মধ্যে নিজস্ব স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করতে শুরূ করে।

যেহেতু সবার পরিপক্কতা সমান নয়। তাই আপনার সন্তান কে ফোন দেওয়ার আগে কয়েকটি প্রশ্নের উওর বের করুণ। আপনার সন্তান কি নিজের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ফোন চাইছে নাকি। সোসাল মিডিয়ার ব্যাবহার মূখ্য উদ্দেশ্য। অ্যাপ ডাউনলোড ও কথা বলা সীমিত রাখতে পারবে তো। পড়াশোনার সময় কি অযথা তথ্য আদান প্রদাণ থেকে বিরত থাকতে পারবে। এগুলো আগে যাচাই করে নেন ফোন দেওয়ার আগে। 

১৪ থেকে ১৮ বছর বয়স

এই বয়সে মানুষের মস্তিস্কের প্রি ফন্টাল কন্টেক্স পুরোপুরি বিকাশ লাভ করে। যার কারণে  সিদ্ধান্ত গ্রহণ। দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী শিক্ষা ও ভাষাগত সক্ষমতা পূর্ণ রূপ লাভ করে। এই বয়সীদের বেশির ভাগই যৈৗক্তিকভাবে স্মার্ট ফোন ব্যাবহারে প্রস্তুত। বিলগ্টেস তার সন্তানদের ১৪ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করতে দেননি।

তবে কমন সেন্স মিডিয়া এর প্রতিষ্টাতা জেমস স্টেয়ার নিউইয়র্ক টাইমস কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন। যে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত সন্তানদের স্মার্ট ফোন দেওয়াটা ক্ষতিকর হতে পারে। তারমতে, এই বয়সীদের লিমিট ছাড়া ইন্টারনেট অ্যাকসেস দেওয়া হলে সেটা তাদের এবং বন্ধুদের জন্য হুমকি হতে পারে। 

তাই তাদের স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করার ক্ষেত্রে সচেতন করা বাবা মার দায়িত্ব। কিছু ক্ষেত্রে যেমন খাওয়া এবং ঘুমের সময় স্মার্ট ফোন ব্যাবহারে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে যাতে করে তারা পর্যাপ্ত ঘুমানোর সময় পায়। 

স্মার্ট ফোন ব্যাবহারে করণীয়

চারটি উপায়ে শিশুদের স্মার্ট ফোন ব্যাবহারে সচেতন করা যায়। এগুলো হচ্ছে মোবাইল এর ব্যয় নিয়ন্ত্রন। স্মার্ট ফোন নিরাপদ করা। শ্রদ্ধাবোধ থাকা এবং পরিবারের নিয়মনীতি মেনে চলা। আপনি যে বয়সী শিশুকেই মোবাইল ফোন দেন না কেনো এই চারটি বিষয় মেনে চলাটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। 

সন্তানদের কিভাবে স্মার্ট ফোন চালানো শিখাবেন

পরিবারের কিছু নিয়ম তৈরী করূন এবং এই নিয়ম গুলো মানার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরী করূন। এই নিয়ম গুলো একেবারে স্পষ্ট হতে হবে যেমন কখন কোথায় কিসের জন্য স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করা যাবে।

মোবাইল ফোন কতক্ষণ সময় ধরে ব্যবহার করা যাবে ইত্যাদি। এক্ষেত্রে অবিভাবকদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সন্তানরা যেনো তাদের অনুসরন করতে পারে তার জন্য নিজেদের কেই মডেল হিসেবে দার করাতে হবে। শিশুদের শুরুতে ইন্টরনেট ব্যাবহার করা যায না এমন ফোন ব্যাবহার করতে দিন। 

সময় এর সাথে সাথে সে দায়িত্বশীল হলে তারপর স্মার্ট ফোন দিন। এবং নিরাপত্তার জন্য ফোনে পারেন্টাল কোনট্রল সেট করুণ। স্মাটৃ ফোন এ যে অ্যাপগুলো লোকেশন ব্যাবহার করে এগুলো নিযমিত চেক করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করতে হবে। শিশুদের অনলাইনে ব্যাক্তিগত তথ্য না দিতে সচেতন করতে হবে। 

সব থেকে গুরূত্বপূর্ণ  বিষয় হচ্ছে শিশুদেরকে অপমানজনক বা অশ্লীল ছবি ইমেইল বা বার্তা আদান প্রদান এ সতর্ক করতে হবে। সবশেষে আপনার সন্তান কত সময় ধরে মোবাইল ফোন দেখছে তা নিয়ন্ত্রণ করুন। 

আরও পড়ুনঃ

আশা করি আজকের কনেটেন্টটা সম্পূর্ন মনোযোগ সহকারে পড়লে এবং বর্ণনামতে উপরোক্ত স্টেপ গুলো অনুসরণ করলে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। আর ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করুন। এরকম আরো উপকারি পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

as