FREELANCERS IT https://www.freelancersit.com/2022/11/blog-post_23.html

বিশ্বকাপে মুসলিম দেশগুলো কেমন সমর্থন পাচ্ছে?

৯২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে একটা মুসলিম দেশে। নানা বিতর্ক পেছনে ফেলে মোটামুটি জমকালো আয়োজনেই নিজেদের ঐতিহ্য তুলে ধরছে কাতার। যদিও মাঠের পারফরম্যান্স হতাশ করেছে স্বাগতিকদের। আর বিশ্বকাপ ইতিহাসই বলছে কখনোই খুব একটা সফলতার মুখ দেখেনি অংশগ্রহণকারী মুসলিম দেশগুলি।
বিশ্বকাপে মুসলিম দেশগুলো কেমন সমর্থন পাচ্ছে?
আমরা যদি একটু বিশ্বকাপের রোল ওনারে নজর দেই তাহলে দেখা যায় যে এখন পর্যন্ত নিচের আটটি দেশ বিশ্বকাপ জিতেছে।

আরো পড়ুনঃ কাতার বিশ্বকাপের সময়সূচি 2022 | Qatar World Cup Schedule 2022

বিশ্বকাপ জিতেছে যেসব দেশ

ব্রাজিল ৫ বার, জার্মানি ৪ বার, ইতালি ৪ বার, আর্জেন্টিনা ২ বার, উরুগুয়ে ২ বার, ফ্রান্স ২ বার, ইংল্যান্ড এবং স্পেন ১ বার করে ট্রফি জিতেছে। তবে এই আট টি দেশ বিশ্বকাপ জিতলেও বাংলাদেশে যেন মনে হয় কেবল দুটি দেশই ফুটবল খেলে। সেটা হচ্ছে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা । 

ব্রাজিল আর্জেন্টিনা

এই দুটি দেশ ছাড়া কোন কথা নেই। সবখানেই এ দুটি দেশের সমর্থক। এই দুটি দেশকে ঘিরে নানান পাগলামি এখন চোখে পড়বে সমর্থকদের, হলুদ আর আকাশি-সাদার পতাকা।  নানান সব দৃশ্য এই বিশ্বকাপকে ঘিরে এখন দৃশ্যমান। এখন এই দুটি দেশের মধ্যে মঙ্গলবার সবার আগে মাঠে নামে লেওনিল মেসির আর্জেন্টিনা এবং সেই মেসের আগে একটা মজার বিতর্ক দেখা যাচ্ছে সোস্যাল মিডিয়ায়। নানান রকম কথা-বার্তা হচ্ছে। কারণ আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ দেশ যে সৌদি আরব, সেটা  একটি মুসলিম প্রধান দেশ এবং আর্জেন্টিনার বদলে তাদের সাপোর্ট করা উচিৎ কিনা । সেরকম কথা তারা বলছেন। 

বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন এই বিষয়ে। যেমন কেউ বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই সৌদি আরব সরকার প্রতিবছর বাংলাদেশকে হাজার হাজার চাকরির ভিসা দিচ্ছে, সৌদি সরকার কর্তৃক বাংলাদেশিরা যে পরিমাণ কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন। পৃথিবীর অন্য কোন দেশ এই সুযোগ বাংলাদেশকে দেয় না। অথচ কতজন মানুষ এই দেশকে সমর্থন দিচ্ছে?

আবার আরেকজন বলেছেন, আমি ছোট থেকেই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। কিন্তু প্রথম খেলা আমি  আর্জেন্টিনা সাপোর্টার না। আমি আমার রাসুল সাঃ এর পতাকার সাপোর্টার। প্রথমত সৌদি আরবরে জন্য শুভকামনা তার পরে আর্জেন্টিনা। 

কেউ ধর্মীয় আবার কেউ অর্থনৈতিক কারণ কে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাই ধর্মীয় এবং অর্থনৈতিক দুটি কারণই রয়েছে। আমরা যদি লক্ষ্য করি যে সৌদি আরব ছাড়াও আরও কিন্তু ৫ টি মুসলিম দেশ এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করছে।
কাতার বিশ্বকাপের মুসলিম দেশ

মুসলিম দেশগুলোর এবারের বিশ্বকাপের সম্ভাবনা কেমন?

যেহেতু মুসলিম প্রধান দেশে  এবার বিশ্বকাপ হচ্ছে তাই আমরা একটু দেখি যে এই ৬ টি মুসলিম দেশগুলোর এবার বিশ্বকাপের সম্ভাবনা আসলে কেমন? 

কাতার বিশ্বকাপ শুরুর কয়েকদিন আগ পর্যন্ত ৬ টি মুসলিম দেশের মধ্য্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় মনে করা হচ্ছিল সেনেগালকে। কিন্তু সেই হিসেবটা প্রায় উলোটপালট হয়ে গেছে দলের প্রাণভমরা এবং দলের অধিনায়ক সাদিয়মানে ইন্জুরির কারণে ছিটকে পড়ার পর।  বর্তমান আফ্রিকান চাম্পিয়্যান সিনেগাল এর র‌্যাংক এখন ১৮ । আর গত ৪ বছর ধরেই ফিফা র‌্যাংকিং এ আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সবার উপরের স্থানটি ধরে রেখেছে তারা। তাই এই গ্রুপ থেকে নেদারল্যান্ডের সাথে সেনেগালেরই ২য় রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি মনে করা হচ্ছে। 

র‌্যাংকিং এর হিসেবে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সিনেগালের পরই অবস্থান ইরানের। ফিফা র‌্যাংকিং এ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইরান শীর্ষে থাকলেও সি গ্রুপের ৪ দলের মধ্যে তারাই সবার নিচে। তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম অবশ্য দারুণ। গত  আড়াই বছরে খেলা ২১ টি ম্যাসের মধ্যে ১৭ টিতেই তারা জিতেছে। কিন্তু বিশ্বকাপের কয়েক মাস আগে কোচ পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে হওয়া নাটকীয়তা দলের মানসিকতায় হয়ত কিছুটা প্রভাব ফেলবে।

ইরানের মতো মরক্কোর কোচও ঠিক তিন মাস আগে বরখাস্ত হন। তবে ধারনা করা হয় সেটি তাদের দলকে মানষিকভাবে আরো শক্তিশালী করেছে। কারণ কোচ পরিবর্তনের পর দলের তারকা খেলোয়ার সেলসির হাকিম জিএক আর বায়ানের নোসাইর মাজরাবি দলে ফিরেছেন। তবে গ্রুপ পর্ব পার হতে হলে কানাডার পাশাপাশি শক্তিশালী বেলজিয়াম আর ক্রোশিয়ার বাধাও টপকাতে হবে ১৯৮৬ সালে শেষবার নকআউট পর্বে ওঠা মরক্কো কে।

আরেক মুসলিম দেশ তিউনিসায়াও এর আগে ৫ টি বিশ্বকাপ খেলে কখনই গ্রুপ পর্ব পার হতে পারে নি। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিউনিসিয়া ম্যাস জিতেছে মোটে  ২ টি। এবারও গ্রুপ পর্ব পার হওয়াটা কঠিনই হবে। প্রতিপক্ষ ফ্রান্স এবং ডেনমার্ক এর অবস্থান শীর্ষ ১০ এ ।

স্বাগতিক কাতার এবারের বিশ্বকাপে স্বাগতিক দেশ হিসেবে খেললেও গত কয়েক বছরের ফর্ম আর প্রস্তুতির হিসেবে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। ২০১৯ সালে এজিয়ান কাতার দলের অধিকাংশ খেলোয়ার বয়সে তরুণ এবং কাতারের ঘরোয়াদিকে খেলে থাকেন। বড় পর্যায়ে খেলার তেমন অভিজ্ঞতাও নেই।

কাতারের মতে সৌদি আরবেরও প্রায় সব খেলোয়ারই সৌদিলীগে খেলেন। তবে সৌদি দলের আত্ববিশ্বাসের জায়গা তাদের বাছাই পর্বের পারফরমেন্স। তাই এবারের আসরে এর্জেন্টিনা, মেক্সিকো আর পোল্যান্ড এর সাথে কঠিন গ্রুপে থাকলেও ১৯৯৪ সালের মতো গ্রুপ পর্ব পার করার স্বপ্ন দেখতেই পারে সালগামরা।

আরো জানুনঃ
পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

0 Comments

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন ??

নটিফিকেশন ও নোটিশ এরিয়া