ফ্রিল্যান্সিং কি হালাল ?
আমরা যারা ফ্রিল্যান্সিং করি, অনেকেই জানিনা ফ্রিল্যান্সিং হালাল নাকি হারাম। আশা করি এই পোস্ট টি পড়লে আপনি জানতে পারবেন ফ্রিল্যান্সিং হালাল নাকি হারাম। সুতরাং এই পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি হালাল ?
ফ্রিল্যান্সিং কতটুকু জায়েয আর কতটুকু না জায়েয? কোন সেক্টরে কাজ করা জায়েয? আর কোন সেক্টরে কাজ করা না জায়েয? কোনটা হালাল কোনটা হারাম এই বিষয় গুলো আমাদের জানা দরকার। ফ্রিল্যান্সিং এখন খুব জনপ্র্র্র্র্র্রিয় একটা বিষয়। বাংলাদেশে অনেক প্লাটফোর্ম রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য। এখানে অনেক ছেলে মেয়ে কাজ করে। ফ্রিল্যান্সিং হালাল নাকি হারাম এইটা জানতে হলে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকতে হবে।
মনে করুন, আমি আপনার সাথে কোনো একটা কাজে চুক্তি বদ্ধ হই। তাহলে, এখানে উভয় পক্ষের লাভ রয়েছে। এই যে লাভ আপনি আমার থেকে নিচ্ছেন, আবার আপনি আমাকে দিচ্ছেন। এইটাই যদি অনলাইন এ করেন এইটাকেই বলে ফ্রিল্যান্সিং। আবার ধরুন, আপনি বাস্তবে কোনো প্রতিষ্টানের হয়ে কাজ করতেছেন। ঠিক এইটাই যদি কেউ অনলাইনে করে এটাকেই অনলাইন এর ভাষায় ফ্রিল্যান্সিং বলে। ফ্রিল্যান্সিং এ কারো কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
মনে রাখবেন, প্রতিটি কাজেই দুইটি ভাগ রয়েছে। একটা হালাল একটা হারাম । যেকোনো কাজ হালাল হওয়ার জন্য কোরআনে আল্লাহ তায়ালা একটা শর্ত উল্লেখ করেছেন। সূরা নিসার ২৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, তোমরা যখন ব্যাবসার উদ্দেশ্যে কোনো কাজ করবা, তোমাদের উভয়ের সম্মতি থাকতে হবে। একে অপর এর প্রতি সম্মতি না থাকলে সেই ব্যবসা হালাল হবে না।
আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন, আপনিও রাজি আমিও রাজি। এটা হলেও কিন্তু ব্যবসা হালাল হবে না। কারণ, মনে করুন, আপনি মদের বিক্রেতা আমি মদের ক্রেতা এটা হারাম হয়ে যাবে। সুতরাং উভয় এর সম্মতি থাকলেই হবেনা, আপনার ব্যাবসার উপাদান হালাল হতে হবে। যদি উপাদান টা হালাল হয় ,তাহলে উভয়ের সম্মতি টা গ্রহনযোগ্য হবে। এখন আসুন ফ্রিল্যান্সিং হালাল নাকি হারাম ।
সূরা বাকারার ২৭৫ নং আয়াতে , আল্লাহ তায়ালা ব্যাবসাকে হালাল করেছেন আর সুদ কে হারাম করেছেন। এবং ব্যবসা হচ্ছে রাসুল ( স ) এর সুন্নাত। তাহলে বুঝা গেলো ফ্রিল্যান্সিং সম্পূর্ণ হালাল কাজ। এখন সবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ফ্রিল্যান্সিং এ তো অনেক সেক্টর রয়েছে সবই কি হালাল। এখানে গ্রাফিক্স ডিজাইন আছে , ওয়েব ডিজাইন আছে ইত্যাদি ।
আমরা যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কথা বলি যে গ্রাফিক্স ডিজাইন হালাল নাকি হারাম। গ্রাফিক্স ডিজাইন করে যারা ইনকাম করেন এই টাকা হালাল। তবে গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনি কোন জিনিস এর উপর করছেন সেটার অনুমতি ইসলাম দেয় কিনা সেটা আপনাকে জানতে হবে। আমরা সবাই জানি যে,কোনো প্রাণির ছবি আকা সম্পূর্ণ হারাম। কোনো প্রাণির ছবি একে টাকা ইনকাম করা হারাম।
আমরা যদি ডাটা ্এনট্রির কথা বলি যে, ডাটা এনট্রি হালাল নাকি কি হারাম। ডাটা এনট্রি হালাল। তবে আমরা যদি কোনো হারাম পণ্য বা হারাম কোনো জিনিস যেটাকে ইসলাম সমর্থন করে না এই সকল কিছুর ডাটা এট্রি করে দেয় তাহলে কাজটা হারাম হবে। কারণ এতে হারাম কাজে সাহায্য করা হবে। আর ইসলামে হারাম কাজে সাহায্য করা জায়েয নেই।
ইউটিউব ভিডিও থেকে টাকা ইনকাম হালাল না হারাম। অনেক আলেমের মতেে এটা হারাম। তবে তারা এটাও বলেছেন যদি আপনি ভালো কোনো জিনিসের অ্যাড দিয়ে ইনকাম করতে পারেন তাহলে হালাল হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সচেতন হতে হবে। কোনো খারাপ অ্যাড যেনো না আসে।
ঠিক একইভাবে, ডিজিটাল মার্কেটিং হালাল নাকি হারাম। ডিজিটাল মার্কেটিং হালাল। তবে আপনি যদি কোনো খারাপ পণ্য বা হারাম কোনো কোম্পানির মার্কেটিং ্এর কাজ করেন এটা হারাম হবে। কারণ যে হারাম কাজ করে আর যে হারাম করতে সাহায্য করে উভয়ে সমান অপরাধী তাই তখন এটা হারাম হবে।
একটা নিয়ম যদি আপনি মনে রাখতে পারেন, তাহলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন, কোন সেক্টর হালাল আর কোন সেক্টর হারাম। প্রথমে আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হলো, আপনি যে কাজ করতেছেন সেই কাজ এর উদ্দেশ্যটা কি। মনে করুন, আাপনি কোনো একটা ওয়েব ডিজাইন করছেন এইটার দ্বারা যদি হারাম কে তুলে ধরা হয়. তখন আপনার বিবেক কি বলবে। যেই কাজ এর মাধ্যমে ইসলাম এর ক্ষতি হয় না সেই কাজ সম্পূর্ণ হালাল।
তাহলে আমি যেই কাজটা করতেছি এই কাজ দ্বারা যদি হারাম কে তুলে ধরা হয় তখন এটা হারাম হবে। আর যদি হালাল কে তুলে ধরা হয় বা হারাম এর কোনো ছোয়া নেই, তখন এটা হালাল। তাই এই একটা নিযম মাথায় রাখবেন যে, আমি যেই কাজটা করছি এই কাজ এর মাধ্যমে ইসলাম এর কোনো বিধান অমান্য হচ্ছে কি না। যদি অমান্য হয় তাহলে কাজটা হারাম হবে।
আশা করি, বুঝতে পেরেছেন ফ্রিল্যান্সিং হালাল নাকি হারাম। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে হালালভাবে ফ্রিল্যান্সিং করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
আরও জানুনঃ
ভালো লাগলে পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক আপডেট তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।