নিবন্ধন সনদ পেলো গুগল ও অ্যামাজন বাংলাদেশে ব্যবসায়ের জন্য
বাংলাদেশের রাজস্বতে ১৫% ভ্যাট এবং বছর শেষে মোট টার্ন ওভার রির্টান জমা দিবে নিবন্ধনভূক্ত প্রতিষ্ঠান দুটি
বিশ্বের প্রধান দুই টেক জায়ান্ট গুগল ও অ্যামাজন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য “ব্যবসায়িক পরিচয় নম্বর” বা বিআইএন প্রাপ্ত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠান দু’টি এই প্রথমবারের মতো নিবন্ধনভূক্ত হয়ে দেশের রাজস্বতে ১৫% ভ্যাট দিবে এবং বছর শেষে মোট টানওভার রিটার্ন জমা দেবে।
কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, এনবিআরের ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের পরিচালক জানান যে, গত সোমবার “দ্যা গুগল এশিয়া-প্যাসিফিক পিটিই লিমিটেড” নামে গুগলকে এবং বৃহস্পতিবার “অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস ইনক” নামে অ্যামাজনকে বিআইএন জারি করেছেন।
- আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট দেখুন
- প্রতি সপ্তাহেই বোনাস! বিকাশ অ্যাপ ওয়েলকাম অফার ২০২১
- নগদে ৮০ টাকা বোনাস নিন। নগদ অফার ২০২১
তিনি আরও জানান “আমরা ইতিমধ্যে নিবন্ধনের নথিগুলোর অনুলিপি প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্সকে (PWC) হস্তান্তর করেছি। PWC বাংলাদেশের উভয় সংস্থার পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করছে।
এনবিআরের চাপের সম্মুখীন হয়ে গত বছর ফেসবুক ইনক বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য একটি এজেন্ট নিয়োগ করেছিল। সে কারণে বিআইএন না থাকলেও ফেসবুক প্রতিষ্ঠানটির এজেন্ট এইচটিটিপুল বর্তমানে রাজস্ব বোর্ডকে ভ্যাট দিচ্ছে।
বিশ্বের প্রায় ৪০ টি দেশে ৭০ টি অফিসে গুগল তার কাজ করছে। অ্যামাজন কাজ করছে প্রায় ১৭টি দেশে। এর মধ্যে ভারতের হায়দারাবাদে সবথেকে বড় অফিস অবস্থিত।
![]() |
গুগল ও অ্যামজান একটি বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান |
গুগল বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় একটি সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে গুগল ই-মেইল পরিসেবা, ওয়েব ব্রাউজার এবং প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত বিভিন্ন অনলাইন সরঞ্জামের জন্য সুপরিচিত।গুগল ২০২০ সালে ১৮ হাজার ১০০ কোটি ডলার আয়ের অধিকাংশ ইনকাম এসেছিল গুগলের বিজ্ঞাপন থেকে। তাছাড়া গুগল প্লে স্টোর, ক্রোমকাস্ট, ক্রোমবুকস, অ্যান্ড্রয়েড, গুগল অ্যাপস এবং গুগল ক্লাউড প্লাটফর্ম থেকে গুগল আয় করে থাকে।
অপরদিকে বাজার নির্ধারনের ভিত্তিতে অ্যামাজন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। বর্তমানে অ্যামাজনের বাজার মূল্য প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। গত ২০২০ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ২১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আয় করেছে।
বড় বড় প্রতিষ্ঠান গুলো আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্থ প্রদান করে। অনেকেই অবৈধ চ্যানেল ব্যবহার করে এই অর্থ প্রদান করে। যার অনুমোদন এনবিআর বিধিবিধিউ নয়।
অনলাইন প্রকল্প পরিচালক জানান "ই-কমার্স, বিজ্ঞাপন অ্যাপস, জিমেইল এবং অন্যান মাধ্যমে ইতিমধ্যে এই প্রতিষ্ঠান গুলোর বড় আকারের ব্যবসা রয়েছে বাংলাদেশে। তাদের ব্যবসাগুলো আগের মত চলতে থাকবে কিন্তু বিধিমালা মেনে চলবে।
তিনি আরও জানান যে, "এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভ্যাট পরিশোধের দু'টি বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। তারা ভ্যাট প্রদানের জন্য বাংলাদেশে এজেন্ট নিয়োগ করতে পারবে অথবা তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোন শাখা ব্যবহার করে ভ্যাট প্রদান করতে পারবে"
এই প্রসঙ্গে এনবিআর আধিকারিক বলেন, গুগল ও অ্যামজনক স্থানীয় পরামর্শ দাতার মাধ্যমে বা তাদের দেশ থেকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবে। তবে ডিজিটাল প্লাটফর্মের সাথে পুরোপুরি অনুগত হওয়ার জন্য সংস্থাগুলি এখানে অফিস খুললে ভালো হয়। গত ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিদেশি সংস্থাগুলিকে নিবন্ধনের জন্য এবং ভ্যাট প্রক্রিয়াধীন করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল।
২০১২ সাল থেকে গুগল, অ্যামাজন সহ বেশ কিছু সংস্থা বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য তাদের নিবন্ধনের চেষ্টা করছে। গুগল এবং অ্যামাজন এর আগেও অনেকবার তাদের নিবন্ধনের জন্য বাংলাদেশের অনেক ফার্মের সাথে যোগাযোগ করলেও কিছু আইনী জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
আরও জানুনঃ