google.com, pub-8571279523475240, DIRECT, f08c47fec0942fa0 Freelancers IT | Learn More About Freelancing and Outsourcing

sfd

কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ইন্ড্রাস্টি সফলতা ও বিস্তৃতি

 একটা সময় ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর অনেকটা শখের বশেই করা হতো। পিউডিপাই,ডুডপার্ফেক্ট, মি.বিস্ট এর মতো বড় ভড় ইউটিউবাররা শখের বসেই কন্টেন্ট ক্রিয়েশন করেছিলো। যদিও বর্তমানে তাদের বার্ষিক আয় মিলিয়ন ডলারেরো বেশি। বিশ্বব্যাপি ডিজিটালাইজেশন এবং স্মার্টফোন সহজলভ্য হওয়ায় কন্টেন্ট ক্রিয়েশনকে সবাই নিজেদের পেশা হিসেবে নিতে শুরু করেছে।

কেনো হঠাৎ সবাই এতো কন্টেন্ট ক্রিয়েশনে ঝুঁকে পড়লো আর কতোই বা বড় এই কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি সবকিছুর এ টু জেড নিয়েই আজকের আর্টিকেল। তাই সবকিছু পুরোপুরি জানতে অবশ্যই পুরো আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ার অনুরোধ রইলো।


কন্টেন্ট ক্রিয়েশন নতুন ইন্ড্রাস্টির সূচনা

আগে কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি বলতে সবাই "ইউটিউব" কেই চিনতো। তবে সময়ের ধারাবাহিকতা এই প্লাটফর্মে এসেছে পরিবর্তন। বর্তমানে সবাই শুধুমাত্র ইউটিউব না ব্লগার,পোডকাস্টার,ইউটিউব,স্টীমার ইত্যাদিতে কন্টেন্ট ক্রিয়েট করছে। পাশাপাশি ভালো পরিমাণ টাকা আয় ও করছে। বর্তমানে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। 

২০২৭ নাগাদ এই মূল্য ৫২ মিলিয়ন ডলারে এবং বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ১৭% হবার সম্ভাবনা আছে।

ইউটিউব

শুধুমাত্র ইউটিউবেই ৫০ মিলিয়ন ক্রিয়েটর আছে যারা প্রায় ২ বিলিয়ন একটিভ কন্টেন্ট এর যোগান দিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে ইউটিউব থেকে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের আয় হয়েছে ১৫.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০১৮ সালের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে সেরা ৭ জন ইউটিউবারের আয় ছিলো ১২৫.৫ মিলিয়ন ডলার। 

শুনলে অবাক হবেন যে সেরা সাতজনের একজন ছিলো ৮ বছরের একজন বাচ্চা যার নাম "রায়ান কাজি"। যার আয় হয়েছিলো ২৬ মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে ৬ ডিজিটের আয় করা ইউটিউবারের সংখ্যা আগের থেকে প্রায় বেড়েছে ৪০ শতাংশ।

ইনফ্লুয়েন্সার

ইউটিউবের ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রতি ভিডিও থেকে আয় হয় ৩,৮৫৭ ডলার। তবে ইনফ্লুয়েন্সারদের সবচেয়ে বড় মার্কেট আছে ইন্সটাগ্রামে। বিশ্বের ৭০ শতাংশ ইনফ্লুয়েন্সার ইন্সটাগ্রামে আছে। ইনফ্লুয়েন্সার হার দেখলে বুঝা যাবে যে,

  • ফেইসবুকে আছে ৩৫.১%
  • টুইটারে ২৯.৫ %
  • ইউটিউবে ২০.৫%

আমেরিকার বাজারে তাদের পন্যর জন্য প্রায় ৬৯% ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করে থাকে। ২০১৮ ইনফ্লুয়েন্সারদের মার্কেট সাইজ ছিলো ১.৬০ বিলিয়ন ডলার। যা ২০১৯ এ বেড়ে ২.৩৮ বিলিয়ন ডলারে উপনীত হয়। ৩-৭ মিলিয়ন সাবক্রাইবার ইনফ্লুয়েন্সারদের আয়ের তালিকাঃ

  • গড়ে ফেইসবুক থেকে ১,৮৭,০০০ ডলার
  • ইন্সটাগ্রাম থেকে ৭৫,০০০ ডলার
  • টুইটার থেকে ৩০,০০০ ডলার

৫০,০০০ থেকে ৫,০০,০০০ সাবক্রাইবারদের আয়

  • ইউটিউব থেকে ২,৫০০ ডলার
  • ইন্সটাগ্রামে ১,০০০ ডলার
  • টুইটারে ৪০০ ডলার

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটে ব্যয় করা এখন অনেক লাভজনক। ইনফ্লুয়েন্সারদের পেছনে প্রতি ১ ডলারের জন্য বিজ্ঞাপন দাতাদের আয় হচ্ছে গড়ে ৬.০৫ ডলার। প্রায় ১৩% বিজ্ঞাপন দাতাদের প্রতি ১ডলারের বিপরীতে আয় হচ্ছে ২০ ডলারের ও বেশি। বেশিরভাগ ইনফ্লুয়েন্সার ফেইসবুক এর মধ্যে বেশি ঝুঁকে থাকে কারণ ৪৯% ব্র‍্যান্ড এঙ্গেজম্যান্ট হয় এর জন্য।

কন্টেন্ট ক্রিয়েশন থেকে আয় করার উপায়

কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা মূলত কি কি উপায়ে আয় করে থাকে তা নিয়েই বিস্তারিত।

  • বিজ্ঞাপন আয়

বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় সবথেকে বেশি কাজ করে থাকে। কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রায় ২৮% আসে বিজ্ঞাপন থেকে।২০১৮ সালে আমেরিকাতে ১১১ বিলিয়ন ডলারের মার্কেট ছিলো যার একটি বড় জায়গা দখল করে আছে গুগল,ফেইসবুক,ইউটিউব। তার মধ্যে  অন্যতম গুগলের এডসেন্স। এর মাধ্যমে গুগলের দ্বারা পরিচালিত বিজ্ঞাপন বিভিন্ন পেইজে দেখানো হয়। এডসেন্স থেকে আসা আয়ের ৩২%  গুগল রাখে এবং ৬৮% ব্লগারদের দেয়া হয়। 

সাধারণত বিভিন্ন ব্লগ পেজের চারিপাশে বিজ্ঞাপন দেখা যায়,এসকল কোম্পানিরা বিজ্ঞাপনে ক্লিকের উপরে যে আয় হয় সেখান থেকে টাকা প্রদান করে থাকে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের সবচেয়ে ভালো ওয়েবসাইট হচ্ছে ইউটিউব। ইউটিউবে বিজ্ঞাপন অংশীদাররা প্রি-রোল,স্লাইড রোল, মিড রোল বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এসব বিজ্ঞাপন থেকে প্রাপ্ত অর্থের ৫৫% দেয়া হয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে আর বাকি ৪৫% ইউটিউব নিজের কাছে রেখে দেয়। সিপিএম দিয়ে মূলত ইউটিউব আয় হিসাব করা হয়ে থাকে।

  • ব্র‍্যান্ড স্পন্সারশিপ

সবচেয়ে বেশি অর্থের আরেকটি উৎস কোনো ব্র‍্যান্ডের স্পনসরশিপ করা। কোনো নামিদামি পন্য স্পপনসরশিপ করলে কোম্পানি তাদেরকে টাকা প্রদান করে থাকেন। সেটা ওয়ানটাইম ও হতে পারে পারফরম্যান্স স্টাইল ও হতে পারে। কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা বিজ্ঞাপন থেকে বেশি ব্র‍্যান্ড স্পপনসরশিপে বেশি আয় করে থাকে।

বলতে গেলে ইন্সটাগ্রামে লোকজন ইনফ্লুয়েন্সারদের লাইফস্টাইল ফলো করে থাকে তাই তাদেরকে মাঝে মাঝে পন্য পোস্ট করার জন্য প্রদান করে থাকেন। যারা যতো পোস্ট করেন তার উপর ভিত্তি করে টাকা প্রদান করা হয়। 

২০১৯ সালে ইন্সটাগ্রামে ৪.৯৫ মিলিয়ন পোস্ট হয়েছিলো ব্র‍্যান্ড স্পনসরশিপ ইনফ্লুয়েন্সার পোস্ট যা থেকে তারা ৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিলেন। বর্তমানে বেশি টাকা প্রদানকৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ কাইলি জেনার,আরিয়ানা গ্রান্ডে,ক্রিশ্চিয়ানো রোনালডো, ডুয়ানে স্মিথ ইত্যাদি। তারা প্রতি পোস্ট থেকে প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার আয় করে থাকে।

  • এফলিয়েট মার্কেটিং

এফলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে মূলত কোনো ব্র‍্যান্ডের পন্যর রিভিউ প্রদান করে। পন্যর প্রতি বিক্রয়ের উপর নির্ভর করে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে অর্থ প্রদান করে। এর থেকে বেশি আয় না থাকলেও ধীরে ধীরে ই-কমার্সের ওয়েবসাইট বৃদ্ধি পাওয়ায় এফলিয়েট মার্কেটিং বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালে এফলিয়েট মার্কেটিং এর মূল্য ছিলো ১২ বিলিয়ন ডলার যার প্রতিবছর প্রবৃদ্ধির হার ১০%।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রায় ৮১% ব্র‍্যান্ড তাদের পণ্য এফলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে করে। ২০১৭ সালে এফলিয়েট মার্কেটিং থেকে ৫ বিলিয়ন ক্লিক আর ১৭০ মিলিয়ন লেনদেন হয়েছে। এফলিয়েটের জন্য স্বনামধন্য হলো আমাজন ডট কম। আমেরিকার বাজারে প্রায় ৪০% শেয়ার আমাজনের।

  • মাসিক সাবক্রিপশন

মাসিক সাবক্রিপশনের মাধ্যনে বিভিন্নভাবে আয় করতে পারে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা। টুইচ নামক ওয়েবসাইটে মাসিক একটা সাবক্রিপশনে তারা তাদের পছন্দের ক্রিয়েটরকে সাপোর্ট করে থাকে। বর্তমানে ৩.৮ বিলিয়ন স্ট্রীমার টুইচে স্ট্রীম করছে এবং এদের মাসিক সাবক্রিপশন আছে ১৪০ মিলিয়ন। 

এদের পাশাপাশি ইউটিউব এবং ফেইসবুক মাসিক সাবক্রিপশন এর কাজের ব্যবস্থা শুরু করেছে।২০১৩-১৯ সালে পেট্রিয়ন ওয়েবসাইট থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

  • ডোনেশন এবং টিপস

এই পন্থা সর্বদা ভালোনা তবে এইখান থেকেও আয় সম্ভব। ভালো পরিমাণ আয় করা যায় এইখান থেকে। মূলত লাইভ স্ট্রীমিং এর সময় মানুষরা তাদের কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ডোনেশন করে থাকেন। যদিও ডোনেশনের ২০% কেটে নেয় প্লাটফর্মগুলো।

তবে স্ট্রীপলাপস নামক ওয়েবসাইট সবার নিকট নাম কামিয়েছে কারণ তারা কোনো ডোনেশন চার্জ রাখেনা।২০১৯ সালে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ডোনেশন এনে দিয়েছে স্ট্রীপলাপস।

  • মার্চেন্ডাইজ

এর মাধ্যমে বর্তমানে অনেকে আয় করছে। মূলত বিভিন্ন পন্যর কথা প্রচার করতে হয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের।  ইউটিউবার পিউডিপাই এর মাসিক ৮ মিলিয়ন ডলার যার ৬.৮ মিলিয়ন ডলার আসে মার্চেন্ডাইজ থেকে। মার্চেন্ডাইজ থেকে সেরা ২০টি ইউটিউবার  থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

বাংলাদেশের কন্টেন্ট ক্রিয়েশন

সবাই এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ ও পিছিয়ে নেই প্রতিবছরি কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের সংখ্যা বাড়ছে। আগে সবাই ইউটিউবে কেন্দ্রীক হলেও বর্তমানে ফেইসবুক, টুইটার ইত্যাদিকেন্দ্রিক হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয় যেমনঃ রান্নাবান্না,ভ্লোগ, অডিও, শিক্ষনীয় ইত্যাদি বিষয়ের কন্টেন্ট ক্রিয়েট করছে। তবে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের পরিমাণ বেশিনা কারণ বাংলাদেশের সিপিসি রেট অনেক কম তাই।

আমাদের দুই একটা এফলিয়েট মার্কেটিং থাকলেও বেশি ব্র‍্যান্ড স্পনসরশিপ করা যাচ্ছেনা আর ডোনেশন এবং মার্চেন্ডাইজ এর মতো আয়ের পথগুলি বাংলাদেশে চালু হয়নি। যদিও সাধারণ কিছু বিক্রেতা এইদিকে সাহায্য করছে মার্চেন্ডাইজের তবুও তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

যেহেতু দৈনিক কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের সংখ্যা বাংলাদেশে বাড়ছে তাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে ভবিষ্যতে খুব দ্রুতই সব আয়ের পথ খুলবে এবং বাংলাদেশ ও কন্টেন্ট ক্রিয়েশনে সফলতা আনবে।

আজ কন্টেন্ট ক্রিয়েশন নিয়ে এই পর্যন্তই। আশা করি পোস্টটি আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগবে। ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

as